পাবনা- ৪ আসনে এমপি গালিব সহ ৭১ নেতাকর্মীর নামে মামলা।
পাবনার ঈশ্বরদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মিছিলে হামলার ঘটনায় পাবনা-৪ আসনের (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফকে প্রধান করে আওয়ামী লীগের ৭১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অস্ত্র ও হত্যার চেষ্টা আইনে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাতে ঈশ্বরদী পৌর শহরের শৈলপাড়ার মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে গুলিবিদ্ধ মো. নজরুল ইসলাম (৪৪) বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ৮০-৯০ জনকে।
শুক্রবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম।
এ মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এমপি গালিবুর রহমান শরীফের ছোট ভাই উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল, ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র মো. ইছাহক আলী মালিথা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুলক রানা সরদার, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবুল হাশেম, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু, পৌরসভার কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ মিন্টু, পৌর যুবলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লব, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আবির হাসান শৈশব, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকিবুল হাসান রনি, এমপি গালিবের বোনের ছেলে ইথার ও উচ্ছাস, হাবিবুল ইসলাম, স্বজন সরদারসহ ৭১ নেতাকর্মী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশের অন্যান্য এলাকার মতো ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদীতেও ছাত্র-জনতা শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম টেংরী কাচারীপাড়া আল-হেরা জামে মসজিদ মোড় পাকা রাস্তার ওপর মামলার বাদী, তার বন্ধুরাসহ ছাত্র-জনতা জমায়েত হতে থাকেন। এই সময় এমপি গালিবুর রহমান শরীফের নেতৃত্বে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র পিস্তল, বন্দুক, বোমা, ধারালো অস্ত্র রামদা, হাঁসুয়া, চাপাতি, ছুরি, হকস্টিক, লোহার পাইপসহ তাদের ওপর হামলা চালায়। আসামিদের নিক্ষেপ করা ককটেল ও গুলিতে বাদী ও তার বন্ধু রাসেদুল ইসলাম রিপন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়
এ হামলায় আরো অনেক ছাত্র-জনতা আহত হয়। সাংবাদিকে মার ধর করে মোবাইল, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। মটর সাইকেল সহ বাড়ি ঘরের উপর হামলা করর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্র-জনতার এক দফা আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের দিন থেকেই এমপি গালিবুর রহমান শরীফ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান।
দ্রুত গ্রেপ্তারসহ কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে মামলার বাদী নজরুল ইসলাম বলেন, এমপি গালিবুর রহমান শরীফের হুকুমে ছাত্র-জনতার ওপর ককটেল বোমা নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণ করা হয়। বিভিন্ন ব্যক্তির বাড়ি, জমি, পুকুর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও দখল করেন তিনি।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, মামলায় পাবনা-৪ আসনের সাবেক এমপি গালিবুর রহমান শরীফকে প্রধান আসামি করে ৭১ জনের নামে বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি ৮০-৯০ জন। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে আসামিরাও আত্মগোপন করেছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।