হৃদয় হত্যার আসল রহস্য উদঘাটন
উপজেলার পাকশীতে নতুন রূপপুর গ্রামের মজনু মোল্লার ছেলে ও পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে মাস্টার্সের ছাত্র নাইমুল ইসলাম হৃদয় গত ১০ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন। ওই দিন দুপুরেই হৃদয়ের পরিবারের কাছে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপরাধীরা। হৃদয়ের বাবা রাতেই ঈশ্বরদী থানায় এ বিষয়ক এজাহার জমা দেন। এর ৩ দিন পর সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে উপজেলার দাশুড়িয়া নওদাপাড়া গ্রামে একটি বাড়ির কক্ষে মেঝের মাটি খুঁড়ে কলেজছাত্র হৃদয়ের ১০ টুকরো মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হৃদয়ের মাথা, হাত-পা ও দেহ কেটে ১০ টুকরো করা হয়েছে দেখা এলাকাবাসী শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন।
এসআই আতিকুল ইসলামের অক্লান্ত পরিশ্রমে তথ্যপ্রযুক্তি ও মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করে। ওই ব্যক্তির নাম আবুল হাসনাত মোহাম্মদ ইসমাইল (৪৫) ওরফে হাসান। সে পাবনার পৈলানপুর সবেদা বাগান এলাকার মৃত আবুল মাস্টারের ছেলে।
নাইমুল ইসলাম হৃদয় পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থী এবং ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের নতুন রূপপুর এলাকায় তাঁর বাড়ি। বাবার নাম মজনু মোল্লা। তাদের ওই এলাকায় বিকাশের দোকান রয়েছে।
এসআই আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাবনা জেলা পুলিশের তথ্যপ্রযুক্তি ও মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হই জড়িতরা কোথায় আছে। এরপর রাত ৯টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামে জনৈক চাঁদ আলী নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অপহৃত ছাত্রের লাশের সন্ধান পেয়েছি। হোসেন আলীকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তাঁর ঘরের মেঝে খুঁড়ে ছাত্র হৃদয়ের লাশটি পুঁতে রাখা হয়েছে। মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।’লাশটিকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাবনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এবং একজনকে আটক করা হয়েছে আটক ব্যক্তিকে পাবনা কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। এবং মহামান্য আদালতের কাছে আটক ব্যক্তির ১০ দিনের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। মহামান্য বিজ্ঞ আদালত ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
৭ দিনের রিমান্ড শেষে আসামি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এবং হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। আসামি চাকরি বাবদ ৮০ হাজার টাকা হৃদয়কে দিয়েছিলেন। ৮ মাস ধরে হৃদয় আসামীকে চাকুরি দেয়ার নাম করে গড়িমসি করছিল।টাকা চাইতে গেলে হৃদয় তাকে তার মা-বাবা তুলে গালি গালাজ করে তখন থেকে হৃদয়ের প্রতি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এবং ১০ তারিখে নতুন রুপপুরের বাড়িতে হৃদয়কে ডেকে জুসের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন। এবং হৃদয়ের লাশ নিয়ে সারারাত অপেক্ষা করে। পরের দিন সে বাইরে গিয়ে একটি সুটকেস কিনে লাশটিকে ১০ টুকরো করে নওদাপাড়ার একটি নতুন ভাড়া করা গ্রামের একটি বাড়িতে উঠে। এবং বাড়ির ঘরের মেঝে খুঁড়ে লাশটিকে পুঁতে রাখে। আসামী তার ১৬৪ ধারায় জবান বন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পাবনার পুলিশ সুপার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খানের দিকনির্দেশনা, এবং ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবিরের নির্দেশে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান এর সহযোগিতায় এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আতিক অক্লান্ত পরিশ্রম করে মামলাটি সাত দিনের রিমান্ড শেষে আসামিকে কোর্টে প্রেরণ করেছেন।